Wednesday, July 28, 2021

ডার্ক ম্যাটার নিয়ে আবার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠল

     লিখেছেন 

শো ভ ন লা ল   চ ক্র ব র্তী

Source: Internet

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক পিটার ভ্যান ডোখাম ও তাঁর সহকারীরা একটি বিশেষ গ্যালাক্সির উপর (যার সাংকেতিক নাম তাঁরা রেখেছেন এন জি সি১০৫২-ডি এফ-২) পরীক্ষা চালিয়ে একটি অদ্ভুত সিদ্ধান্তে এসে উপনীত হয়েছেন। তাঁদের পরীক্ষার  ফল অনুযায়ী ওই গ্যালাক্সিটিতে কোনও ডার্ক ম্যাটার নেই। বলাই বাহুল্য এই ফল হৈচৈ ফেলে দিয়েছে পৃথিবীর তাবর জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে।ডার্ক ম্যাটার ঘিরে আবার উঠতে শুরু করেছে নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।প্রথমেই বলে রাখা ভাল যে ডার্ক ম্যাটার এমন এক বস্তু যা সাধারণভাবে আমাদের পরিচিত যে সমস্ত কণা, যেমন, প্রোটন, নিউট্রন বা ইলেকট্রন, সে সব দ্বারা গঠিত নয়। কি করে পাওয়া গেল এই ডার্ক ম্যাটারের সন্ধান? গত শতাব্দীর তৃতীয় দশকের শুরুতে ডাচ জ্যোতির্বিজ্ঞানী জ্যান উর্ত সর্বপ্রথম লক্ষ করেন যে গ্যালাক্সিগুলির তাদের নিজের অক্ষের সাপেক্ষে ঘোরার বেগ প্রচন্ড বেশি। এই নিয়ে শুরু হয় সারা পৃথিবী জুড়ে গবেষণা। 

বিজ্ঞানীরা জানান যে গ্যালাক্সিগুলির যা ঘূর্ণন বেগ তাতে গ্যালাক্সির যে  নক্ষত্রগুলি ওই গ্যালাক্সির সঙ্গে ঘুরছে সেগুলির ছিটকে পড়ার কথা। কিন্তু তেমনটা হচ্ছে না। নক্ষত্রগুলি যেহেতু দৃঢ় ভাবে আবদ্ধ, তাই বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে আসেন যে এখানে নিউটন আবিষ্কৃত মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল অত্যন্ত বেশি। কিন্তু এই ব্যাখ্যায় বাধা সাধল একটি তথ্য। কি সেই তথ্য? আমরা সবাই জানি যে নিউটনের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল ভরের সমানুপাতিক। গ্যালাক্সি থেকে যে আলো নির্গত হচ্ছে সেই আলোর সাহায্যে মাপা হয় গ্যালাক্সির ভর। সেই ভর মেপে দেখা গেল যে সেই ভর ওই পরিমান আকর্ষণ বল তৈরি করতে সক্ষম নয়। ১৯৩৩ সালে এই সমস্যার সমাধান করলেন সুইস-আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রিটজ জ্বইকি। তিনি হিসেব করে বললেন গ্যালাক্সির আপাত ভরের চেয়ে প্রকৃত ভর অনেক বেশি। কত বেশি? সেটাই ওই গ্যালাক্সিতে উপস্থিত ডার্ক ম্যাটারের পরিমান। অজ্ঞাতপরিচয় ওই ভর নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানে শুরু হল এক নতুন অধ্যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত নানা হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে যে পরিচিত পদার্থ বিশ্বের মাত্র ৪ শতাংশ অধিকার করে আছে, বাকি ৯৬ শতাংশ পদার্থ বা শক্তি এখনও বিজ্ঞানীরা চিনে উঠতে পারেননি। এই ৯৬ শতাংশের মধ্যে ডার্ক ম্যাটার অধিকার করে আছে ২৩ শতাংশ, বাকি  ৭৩ শতাংশ ডার্ক এনার্জি, যার প্রকৃত স্বরূপ এখনও পর্যন্ত অজানা রয়ে গেছে। ডার্ক ম্যাটার কিভাবে শনাক্ত হল তা আমরা জানলাম। কিন্তু ডার্ক এনার্জি কিভাবে শনাক্ত হল? ডার্ক এনার্জির সূত্রপাত হয়েছিল আইনস্টাইনের হাত ধরে। আইনস্টাইন নিজে ছিলেন স্থিতিশীল বিশ্বের ধারণার স্বপক্ষে। 

অর্থাৎ, বিশ্ব বাড়ছেও না বা ছোট হয়েও আসছে না। কিন্তু তাঁর নিজের হাতে তৈরি সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের তত্ত্ব গাণিতিক ভাবে প্রমান করলো যে হয় বিশ্বকে প্রসারণশীল হতে হবে অথবা হতে হবে সঙ্কোচনশীল। এমন একটি অভূতপূর্ব গাণিতিক সমস্যার সমাধানে আইনস্টাইন ধরে নিলেন যে সঙ্কোচনের বিরুদ্ধে কাজ করছে একটি প্রসারণ বল।অর্থাৎ, ব্যাপারটা সেই স্থিতিশীল হয়েই রইলো। এর জন্য খানিকটা গোঁজামিল করেই তাঁর গাণিতিক সমীকরণে আইনস্টাইন ঢুকিয়ে দিলেন একটি ধ্রুবক, যার নাম দিলেন কসমোলজিক্যাল কনস্টান্ট। ১৯২০-র দশকে বেশ কয়েকজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী যেমন, এডউইন হাবল, রবার্টসন-ওয়াকার'রা যখন ডপলার ক্রিয়া(এই ক্রিয়া অনুযায়ী একটি আলোর উৎস দর্শক থেকে যত দূরে চলে যাবে ততই ওই উৎস থেকে যে রঙের আলো নির্গত হবে তা দর্শকের কাছে রামধনুর সাতটি রঙের মধ্যে ক্রমশ বেগুনি থেকে লালের দিকে সরতে থাকবে। একে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন, "রেড শিফট") কাজে লাগিয়ে প্রমান করলেন যে বিশ্ব প্রসারণশীল, তখন আইনস্টাইন মেনে নিলেন যে ওই ধ্রুবক তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ! বিশ্ব প্রসারণশীল এটা যেমন ঠিক, তেমনি এটাও ঠিক যে এই বিশ্বের অসংখ্য গ্যালাক্সি একে অপরকে আকর্ষণ করছে। এর প্রভাবে বিশ্বের প্রসারণের হার ক্রমশ কমে আসার কথা। প্রসারণের হার কি হারে কমছে তা পরিমাপ করার একটি পরীক্ষা পদ্ধতি বিজ্ঞানীরা তৈরি করেন , এবং দুটি আলাদা দলে বিভাজিত হয়ে তাঁরা পরীক্ষাটি সম্পাদন করেন। 

Source: Internet


ওই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে। এই পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁদের তিনজন পরবর্তীকালে (২০১১ সালে) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই পরীক্ষা। পরীক্ষার ফল নিয়ে আলোচনার আগে  সেই তিনজনের নাম আমরা একবার দেখেনি  যাঁদের যুগান্তকারী পরীক্ষা আরও একবার প্রমান করেছিল আইনস্টাইনের সমীকরণের সত্যতা এবং সর্বোপরি উন্মোচিত করেছিল বিজ্ঞানের এক নতুন শক্তিকে। তাঁরা ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সল পালমুটার, অস্ট্রেলিয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রায়ান স্মিট  ও বাল্টিমোরের জন হপকিন্স ল্যাবরেটরির এডাম রেস।তাঁদের পরীক্ষার ফল নিয়ে শোরগোল পরে যায় বিজ্ঞানের জগতে। দুই দলের পরীক্ষাতেই দেখা যায় যে বিশ্বের প্রসারণের হার কমছে না উল্টে বাড়ছে! তাহলে তো দেখা যাচ্ছে আইনস্টাইন তাঁর সমীকরণে কসমলজিক্যাল কনস্টান্ট ঢুকিয়ে ঠিক কাজই করেছিলেন। বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে এলেন,  যে শক্তি বিশ্বের প্রসারণের হারকে বাড়াচ্ছে, সেটাই ওই ডার্ক এনার্জি। বর্তমানে এন জি সি১০৫২-ডি এফ-২ গালাক্সিতে ডার্ক ম্যাটারের অনুপস্থিতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নতুন করে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমস্ত গালাক্সিতে যা রয়েছে তা ওই গালাক্সিতে নেই কেন? তবে কি পিটার ডোখাম ও তার সহকর্মীরা যে পরীক্ষা চালিয়েছেন তাতে কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে ? এব্যাপারে ডোখাম ও তাঁর সহকর্মীরা দীর্ঘ বিবৃতি সহযোগে জানিয়েছেন যে এমন একটি আশ্চর্য ফলাফল আসার কারণে তাঁরা পরীক্ষাটি বারবার করেছেন, এবং প্রতিবার একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। এমনকি তাঁরা আহবান জানিয়েছেন অন্যান্যদের পরীক্ষাটি করে দেখার জন্য। এত কিছু করেও কিন্তু ফলাফলের কোনও বদল ঘটেনি।অতঃপর, সন্দেহের তির ধাবিত হয়েছে নতুন তত্ত্ব মডিফায়েড গ্রাভিটি -র (পরিবর্তিত মহাকর্ষ) দিকে।এই তত্ত্ব অনুযায়ী একটি নতুন বল, বা পদার্থবিজ্ঞানের চারটি বল- স্ট্রং ফোর্স, উইক ফোর্স, ইলেক্ট্র-ম্যাগনেটিক ফোর্স ও গ্রাভিটেশন ফোর্স -এর পর একটি নতুন পঞ্চম বল দিয়ে নিউটনের আকর্ষণ বলকে সংশোধিত করতে হবে। অর্থাৎ ডার্ক ম্যাটারের বদলে নিউটনের মহাকর্ষ বলের ফর্মুলার অদলবদল ঘটানো। 

এখানে বলে রাখা দরকার যে একদল বিজ্ঞানী বহুদিন যাবৎ এই দাবি গাণিতিক প্রমান সহযোগে করে আসছেন যে নিউটনের মহাকর্ষের ফর্মুলায় অদলবদল ঘটালে ডার্ক ম্যাটারের সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু নিউটনের ফর্মুলা এমনই সর্বত্রগামী যে দু'এক জায়গায় তার এদিক ওদিক, প্রথমত, হওয়ার কথা নয়, আর দ্বিতীয়ত, সেটা হলেও, ফর্মুলা বদলে ফেলাটা কোনও কাজের কথা হবে না। স্বাভাবিক ভাবেই মডিফায়েড গ্রাভিটি নিয়ে বিজ্ঞানীরা তেমন একটা উৎসাহী নন। এখানে ডোখাম ওই গালাক্সিতে ডার্ক ম্যাটার না থাকার কারণ হিসেবে একটি ব্যাখ্যা সামনে এনেছেন, যার ওপর জোর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ডোখাম ও তাঁর সহযোগীদের মতে এই গ্যালাক্সিটি গঠিত হয়েছে সাধারণ ভাবে গ্যালাক্সি যেভাবে গঠিত হয়, সেই ভাবে নয়। এই গঠন প্রক্রিয়ায় পার্থক্যের কারণেই গ্যালাক্সিতে কোনও ডার্ক ম্যাটার নেই। আপাতত, সেই পথেই শুরু হয়েছে কারণ অনুসন্ধান। ডার্ক ম্যাটারের অনুপস্থিতি কোন অজানাকে সামনে নিয়ে আসতে চলেছে, তার উত্তর একমাত্র সময়ই দিতে পারবে। আমরা তার অপেক্ষায় থাকব।


শোভনলাল চক্রবর্তী



Wednesday, July 21, 2021

এবারের অলিম্পিক গেমস কাদের স্বার্থে, কাদের জন্য?

    লিখেছেন 

শো ভ ন লা ল   চ ক্র ব র্তী

Source: Google Images(Internet)


করোনা অতিমারীর কারণে ২০২০'র অলিম্পিক গেমস পিছিয়ে আনা হয় ২০২১-এ। আগামী ২৩ জুলাই  তারিখে জাপানের টোকিও শহরে এই গেমসের উদ্বোধন হবে। অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে গোটা  জাপানের মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন।কিন্তু জাপান সরকার তা মানতে রাজি হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে নির্বিঘ্নে নিজেদের দেশে অলিম্পিকের আসর বসাতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। জাপানের প্রধানমন্ত্রী জোর গলায় বলেছেন, অলিম্পিক গেমস জাপানেই হবে। অলিম্পিক শুরু হতে বাকি আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন।

তার আগেই অলিম্পিকের আয়োজন নিয়ে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে জাপানে। কারণ করোনার দাপট দ্রুত বাড়ছে জাপানে, অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যে করোনার তৃতীয় ঢেউ জাপানে ঢুকে পড়েছে।গেমস ভিলেজে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন খেলোয়াড়রা। জাপান সরকার গত ৭ জুলাই তারিখেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে অলিম্পিক চলাকালীন, ২২ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশ জুড়ে চলবে করোনা ইমার্জেন্সি। ইমার্জেন্সির মধ্যে গেমস কিভাবে চলবে সেই নিয়ে মাথায় হাত পড়েছে আয়োজকদের। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রী দেশবাসীর উদ্দেশে এক বার্তায় জানিয়েছেন জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ,এই মাসগুলোতে সবাইকে বাড়তি সাবধানতা নিতে হবে।করোনার কথা মাথায় রেখেই এবার অলিম্পিক গেমস দর্শক শূন্য আসনে করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এর আগে ঠিক হয়েছিল পঞ্চাশ শতাংশ সমর্থকদের মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হতে থাকায় সরকারের তরফে সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করা হয়। এই কঠিন পরিস্থিতিতে জাপান সরকার দেশ বিদেশ থেকে আগত খেলোয়াড়দের কতটা সুরক্ষা দিতে পারবেন তা নিয়ে উঠেছে গুরুতর প্রশ্নচিন্হ। খেলোয়াড়দের জন্য থাকবে সুরক্ষা বলয়, কিন্তু সেই বলয় ভেদ করে যে করোনা প্রবেশ করতে পারবে না এমন গ্যারান্টি কেউ দিতে পারছেন না। একেবারে শুরুর দিকে করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে যখন বিশ্বের অনেক দেশ রীতিমত যুদ্ধ করছিল তখন জাপান তা সামাল দিয়েছিল ভালোভাবে। তবে জাপানের টিকা প্রদানের হার ছিল কম, এবং পরের দিকে দেশের কিছু কিছু অঞ্চলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেকটা ভেঙে পড়ে। 

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গেমসের আয়োজনের বিপক্ষে মত দেন।স্টেডিয়ামের ভিতর দর্শক প্রবেশের অনুমতি তাঁরা দেননি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে শতকরা ৭০ জন মনে করেন করোনার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে অলিম্পিক গেমসের আয়োজন এক কথায় অসম্ভব। যে শতকরা ৩০ জন অলিম্পিকের পক্ষে মত দিয়েছেন তাঁরা মনে করেছেন অর্থনীতির স্বার্থে এই গেমস হলেও নিরাপত্তার দিক থেকে দেখলে তা একেবারেই হওয়া উচিত নয়। অলিম্পিক গেমসকে বলা হয়, দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ - সেখানে অর্থনীতির যোগ থাকবে না, এ হওয়া সম্ভব নয়। ২০২০ সালের জাপানে অলিম্পিক গেমসের বাজেট ছিল ১২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেটাই এখন বেড়ে হয়েছে ১৫.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আজ যদি জাপান গেমস বাতিল করে তবে তাদের যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে তার পরিমান প্রায় ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। জাপানের মুদ্রা ইয়েনে যার পরিমান প্রায় ৪.৫ ট্রিলিয়ন ইয়েন। বোঝাই যাচ্ছে যে জাপান একপ্রকার নিরুপায় হয়ে গেমসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিপূর্বে গেমস হওয়া নিয়ে জাপানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির একপ্রস্থ বাক বিতণ্ডা হয়ে গেছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন গেমসের সঙ্গে যে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকবেন তাঁদের টিকাকরণ সম্পুর্ন করতে, কিন্তু এখন প্রতিদিন ১ মিলিয়ন করে টিকা দিলেও সেটা সম্ভব নয়।টোকিও অলিম্পিকের যে চুক্তি ২০১৩ সালে সই হয়েছিল তাতে স্পষ্ট করে বলা আছে যে গেমস যদি বাতিল করতে হয় তবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র অধিকারী আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। তবে অতিমারী অবস্থায় অলিম্পিক বাতিল করার অধিকার জাপানের রয়েছে, কারণ ২০১৩ সালের চুক্তিপত্রে যাঁরা সই করেছিলেন, তাঁরা আজ জাপানের পরিচলন সমিতিতে নেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও জাপান সরকারের মধ্যে লেগে যাবে এক বিশ্রী আইনি লড়াই, যা দুই পক্ষেরই মুখ পোড়াবে। জাপানের উপর গেমস করার জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির বিপুল চাপ, কারণ কমিটির পকেটে ঢুকবে মোট আয়ের ৭৩% শুধু এই গেমসের সম্প্রচারণ স্বত্ব থেকে। অন্যদিকে জাপান অনেকটা লোকসানে। কারণ টিকিট বিক্রি থেকে কোনও আয় হবে না, তার চেয়েও বড় কথা যে সারা পৃথিবী থেকে যে বিপুলসংখ্যক মানুষ খেলা দেখতে আসতেন তাদের থেকে একটা মোটা টাকা আয় হত জাপান সরকারের। যেমন ২০১৯এ জাপানে এসেছিলেন ৩১.৯ মিলিয়ন পর্যটক যাঁরা খরচ করেছিলেন জাপানি মুদ্রায় ৪.৮ ট্রিলিয়ন ইয়েন, প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার পুরোটাই আপাতত জলে। 

এবার একটু দেখা যাক কাদের জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এবং জাপান সরকার শত বাধা বিপত্তি প্রতিরোধ সত্ত্বেও, দেশের মানুষ এবং বিদেশ থেকে আগত খেলোয়াড়দের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কেন এই গেমস এগিয়ে নিয়ে যেতে তৎপর। কারণ একটাই, স্পনসরদের লগ্নি এবং কর্পোরেট পুঁজির বাধ্যবাধকতা। জাপানের ৬০টিরও বেশি কোম্পানি প্রথমে ২০২০র গেমসের জন্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার স্পনসর বাবদ খরচ করে। গেমস ২০২১এ হওয়ার সময় স্পন্সরদের লগ্নি আরও ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পায়। এই টাকা নিশ্চয় কোম্পানিগুলি জলছত্র খোলার কাজে দেয়নি, এর বিনিময়ে তাঁদের চাই "রিটার্ন", মানুষ মরলো কি বাঁচলো তাতে এঁদের কিছুই এসে যায় না।তাই বাধ্য হয়েই সবাইকে গলা মেলাতে হয় "দ্য শো মাস্ট গো অন" বলে। আরও আছে, এই স্পনসরদের টাকার বাইরেও আছে একদল "টপ টায়ার" স্পনসর, যাঁরা কত টাকা দেবেন সেটা জানবে শুধু অলিম্পিক কমিটি। বর্তমান অলিম্পিক গেমসের "টপ টায়ার" কোম্পানিগুলি হল টয়োটা, প্যানাসনিক, ব্রিজস্টোন এবং সামসুং। এঁরা কত টাকা দিচ্ছেন সেটা জানা না গেলেও, এঁরা হুমকি দিয়েছেন অলিম্পিক কমিটিকে যে গেমস যেন কোনও মতেই বাতিল না হয়। 

অলিম্পিক কমিটি জানিয়েছেন গেমস বাতিল হলে তাঁদের "টপ টায়ার" স্পনসরদের ক্ষতিপূরণ মেটাতে কমিটি দেউলিয়া হয়ে যাবে।এই স্পনসরদের বাইরেও থাকছে যে সব শহরে খেলা হবে সেখানকার স্থানীয় স্পনসররা যাঁদের টাকার মূল্যে মোট স্পনসর প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এদের বাইরেও থাকছে সম্প্রচারণের জন্য মার্কিন কোম্পানি এন বি সি উইনিভার্সালের ১.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ। অলিম্পিক এই অবস্থায় যদি হয়, তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন জাপানের জিডিপি সামান্য হলেও বাড়তে পারে। তাই কর্পোরেট বিনিয়োগ এবং তাঁদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চাপে জাপান নিমরাজি হয়ে গেমস শুরুর সবুজ সংকেত দিয়েছে। এখন ভয় একটাই কর্পোরেট স্বার্থসিদ্ধি করতে গিয়ে অলিম্পিক যদি করোনার "সুপার স্প্রেডার" হয়ে দাঁড়ায়, তখন ওই কর্পোরেটরা দায়িত্ব নেবেন তো? মনে তো হয়না। তবে তেমন অবস্থার জন্য মোটা টাকার ব্যবসা ফেঁদে জাপানে বসে আছেন দেশ বিদেশের বীমা কোম্পানিগুলি।অগ্নিমূল্য হারে তাঁরা বীমা করেছেন, গেমসের সঙ্গে সংযুক্ত সকলের। সেই টাকার অঙ্কের কোনও হিসেব নেই। ১৮৯৪ সালে যে অলিম্পিক কমিটি তৈরি হয়েছিল খেলাধুলার মাধ্যমে বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে আজ সেখানে শুধুই টাকার গন্ধ , কর্পোরেট পুঁজির ভ্রাতৃত্ব।


শোভনলাল চক্রবর্তী





Sunday, July 11, 2021

সুকুমারী ভট্টাচার্য : শতবর্ষের আলোকে তাঁর চেতনা আমাদের আলোকিত করুক

   লিখেছেন 

শো ভ ন লা ল   চ ক্র ব র্তী



 ১২ জুলাই সুকুমারী ভট্টাচার্যের জন্মশতবর্ষ(১৯২১-২০১৪)। তাঁর কাজ প্রাচীন ভারতের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে হয়ে রয়েছে মাইলফলক। অথচ তিনি মূলস্রোতের ইতিহাসবিদ থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী সবার কাছেই কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ব্রাত্য। তাই তাঁর জন্মশতবর্ষ ঘিরে তেমন কোনও তোলপাড় নেই সমাজে। অথচ আজকের সময়ে সুকুমারীর কাজ আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তিনি অক্লান্ত অধ্যবসায়ে প্রাচীন ভারতের সমাজ, পুরান, ইতিহাস, বেদ নিয়ে যে কাজ করেছেন তাতে তাঁকে ওই সব বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হিসেবে মেনে নিতে কারুর আপত্তি থাকার কথা নয়।জন্মসূত্রে সুকুমারী ছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্তের উত্তরসূরি। ছোটবেলার এক মর্মান্তিক ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হন এবং জন্মস্থান মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় চলে আসেন। প্রাথমিকের পড়াশোনা করেন ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলে এবং ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সেন্ট মার্গারেট থেকে। সংস্কৃতে সাম্মানিক নিয়ে প্রেসিডেন্সিতে পড়তে চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হন। ভর্তি হন ভিক্টোরিয়া কলেজে। খ্রিষ্টান পরিবারের মেয়ে, কিন্তু পড়তে চান সংস্কৃত, তাই কলেজ কতৃপক্ষ তাঁকে তাঁর ন্যায্য প্রাপ্য ঈশান বৃত্তি থেকে বঞ্চিত করেন। 

কিন্তু পরবর্তী কালে যিনি লড়াই চালাবেন মৌলবাদের বিরুদ্ধে, গোঁড়ামির বিরুদ্ধে, নারীপ্রগতির পক্ষে তিনি তো দমার পাত্রী নন। তাই পরিবর্তে জুবিলি স্কলারশিপ নিয়ে বিএ পাস করেন, ১৯৪২-এ, পরে ইংরেজিতে এমএ। ১৯৪৫- এ শিক্ষকতা শুরু করেন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। শিক্ষতা করাকালীন প্রাইভেটে সংস্কৃতে এমএ করেন। ১৯৫৭ সালে বুদ্ধদেব বসুর আমন্ত্রণে যোগ দেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে। এরপর সুশিলকুমার দে'র আহ্বানে যোগ দেন সংস্কৃত বিভাগে, সেই বিভাগেই ছিলেন অবসর নেওয়া পর্যন্ত। বিয়ে হয়েছিল অধ্যাপক অমল ভট্টাচার্যের সঙ্গে। সুকুমারী ছিলেন বাংলা ও ইংরেজি লেখায় সমান দক্ষ। প্রায় তিরিশটিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন সুকুমারী, যার মধ্যে কয়েকটি যেমন ফেটালিজম ইন এনশিয়ান্ট ইন্ডিয়া, দ্য ইন্ডিয়ান থিওগনি আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচিতি লাভ করে। প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ, বিবাহ প্রসঙ্গ, ইতিহাসের আলোকে বৈদিক সাহিত্য, বাল্মীকির রাম : ফিরে দেখা, হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা প্রভৃতি গ্রন্থ দেশ কালের সময় সীমা অতিক্রম করে। এছাড়াও অনুবাদ করেছিলেন শূদ্রকের মৃচ্ছকটিক। 

আমৃত্যু আস্থা রেখেছেন বাম রাজনীতিতে এবং প্রাচীন সাহিত্যের সনাতনপন্থী অজুহাত আপত্তির বাইরে গিয়ে খুঁজেছেন নারীর ভাষ্য।রামরাজ্যের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে তিনি দেখিয়েছেন, সে এক এমন রাজ্য, যেখানে চন্ডাল বন্ধু হলেও তার অতিথি হওয়া যায় না। উচ্চবর্ণের বালকের প্রাণনাশ হলে তার দায় গিয়ে পরে নিম্নবর্গের  মানুষের তপস্যার উপর। সেই বিশ্বাসেই নিষাদকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। সেখানে সম্পুর্ন নির্দোষ নারীকে লোকাপবাদের ভয়ে শুদ্ধির পরীক্ষা দিতে হয়, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই মিথ্যা ছলে বনবাসে যেতে হয়। যজ্ঞসভায় বিস্তর লোকের সামনে বাল্মীকি নারীটির শুচি নিয়ে অঙ্গীকার করলেও কেউ তাঁর কথায় কর্ণপাত করে না। রাম যখন লঙ্কায় সীতার প্রতি নিজের মনের অন্তর্গত ভাব প্রকাশ করা শুরু করলেন, তখন তিনি সীতাকে বলেন যে সীতা কুকুরে চাটা ঘিয়ের মত অশুচি। এই রাম রাজ্যে নারী ও নিম্নবর্গের মানুষ যাঁরা প্রজাকুলের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ  তাঁদের জন্য কোনও বিশ্বাস বা ন্যায়বিচার নেই।

এই রাজ্য উচ্চবর্ণের পুরুষের সুখসম্মানের অনুকূলে শাসিত। আজ আমাদের রাষ্ট্রের পরিচালকরাও এমনি রাষ্ট্র প্রতিষ্টায় নিরন্তর সচেষ্ট। এর বিরুদ্ধে সেই কবেই কলম ধরেছিলেন সুকুমারী।আজকের রাষ্ট্র পরিচালকদের হাতের গুরুত্বপূর্ণ তাস সাম্প্রদায়িক জিগির। সাম্প্রদায়িকতা কখনও কোথাওই মানবমঙ্গল সাধনের চেষ্টা করেনি। শুধু সংকীর্ণ গোষ্ঠী অর্থাৎ সম্প্রদায়ের স্বার্থকে রাষ্ট্রক্ষমতায় উত্তীর্ণ করে, বিরুদ্ধ মতবাদীদের দমন, শোষণ ও ধ্বংসই এর চিরকালের অঙ্গীকার ও লক্ষ। অধিকাংশ দেশবাসী এখনও সাম্প্রদায়িকতা সম্বন্ধে সচেতনভাবে কিছু ভাবেননি, কিন্তু ভাবার দিন আগত।দেশের সর্বনাশ রোধ করার উদ্দেশ্যে এই ভাবনা ভাবা দরকার।এই ভাবনার কথা সুকুমারী লিখছেন আজ থেকে দুই দশক আগে। আজ একথা আমরা বিস্মৃত প্রায় যে হিন্দু ধর্ম একটি সংহত ধর্ম নয়, এর কোনও আদি প্রবক্তা নেই, কোনও কেন্দ্রীয় ধর্ম গ্রন্থ নেই এবং কোনও কেন্দ্রীয় ধর্ম সংগঠন নেই। ফলে পরমত সম্পর্কে এর কোনও নির্দিষ্ট মনোভাব নেই। এই ফাঁক দিয়েই ঢুকে পড়ছে পরমত সম্পর্কে প্রতিরোধ আর অসহিষ্ণুতা।জার্মানিতে হিটলার বলেছিলেন এক হাজার বছর টিকবে থার্ড রাইখ, সেই স্বপ্ন দেখিয়ে জার্মান জাতটাকে এক জায়গায় করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। 

ভারতবর্ষে ধর্মের একটা ভ্রান্ত চিত্র দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রবঞ্চনা চলছে। ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরকে পিতামহ ভীষ্ম মৃত্যুর মুহূর্তে বলে গেলেন, মানুষের চেয়ে বড় আর কিছু নয় । এসব আমাদের আজ ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।দেবত্বের বদলে ধর্মের নামে শেখানো হচ্ছে দানবিকতা, অসহিষ্ণুতা, যা কেবল নিজের শ্রেষ্ঠত্বকেই বিশ্বাস করে, অন্য কাউকে সম্মান করতে পারে না। আমাদের পেছনের দিকে ঠেলে বলা হচ্ছে বৈদিক যুগের বিজ্ঞান ও জ্যোতিষশাস্ত্র পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে শিক্ষাক্রমে। এখন বেদ মানলে যে আমরা পিছিয়ে পড়ব সে কথা কেউ কানে তুলতে রাজি নয়। হিন্দুত্বের সঙ্গে বেদকে এই যে জুড়ে দেওয়ার প্রয়াস তার যে একেবারেই গোড়ায় গলদ থাকছে সে কথা বারবার তাঁর রচনায় উল্লেখ করেছেন সুকুমারী। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন হিন্দুধর্ম আদতে বেদ বিরোধী। বেদের যজ্ঞে মূর্তির, মন্দিরের কোনও স্থান ছিল না। নৈবেদ্য সাজান হত সূরা, গো-মাংস দিয়ে। হিন্দুধর্মের তীর্থ, ব্রত, ধ্যান, জপ এসবের কোনও উল্লেখ বেদে নেই। 

তবে বেদ ও হিন্দুধর্মের যেখানে গলায় গলায় মিল তা হল এর কোনও  শাস্ত্রেই নৈতিকতার কোনও বালাই নেই। অথচ সমাজ এগিয়ে চলে নৈতিকতার নিরিখে। এই দ্বন্দ্ব বিরাজমান হিন্দুত্বের একেবারে কেন্দ্রে। তাই এই দানবদের ধ্বংস অনিবার্য। তবে আমরা আজ সংশয়ের একটা দু'রাস্তায় মোড়ে এসে দাঁড়িয়ে আছি। কোন রাস্তা নেব আমরা? সে বিচার একান্তই আমাদের । কোন পথ নিলে আগামী প্রজন্মের জন্য রেখে যেত পারবো এক উজ্জ্বল উত্তরাধিকার? সেই পথ অনুসারেই তবে আবর্তিত হোক আমাদের সমস্ত আলোচনা, কথাবার্তা,আচরণ। রাজনীতির অবস্থান স্পষ্ট না হলে যে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আজ আমরা লড়াইয়ে নেমেছি তাতে সাফল্য পাওয়া শক্ত। এই পথের আলোকবর্তিকা হতে পারেন সুকুমারী। তাঁর শতবর্ষে আমরা যদি তাঁর রচনার দিকে নজর ফেরাই তবে আমরা পেতে পারি আমাদের ধনুকের জন্য নব নব তীর। সুকুমারীর চেতনা তাঁর জন্মের শতবর্ষে আমাদের স্পর্শ করুক, এর চেয়ে বড় চাওয়া আর কিছুই হতে পারে না।


শোভনলাল চক্রবর্তী