Sunday, April 4, 2021

রমানাথ রায় : ঘটের মাথায় এঁচড়

 লিখেছেন রামকুমার মুখোপাধ্যায়

রমানাথ রায়


রমানাথ রায় (জন্ম ৩ জানুয়ারি, ১৯৪০) সম্প্রতি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। লিটল ম্যাগাজিন মেলা উপলক্ষ্যে বাংলা আকাদেমি সভাঘরে ৭ই ফেব্রুয়ারি একটি আলোচনাসভা ছিল। রমানাথ রায় ছিলেন সে সভার অন্যতম বক্তা । বছর খানেক পরে তাঁর সঙ্গে দেখা হলো। দেখে বেশ সুস্থ‌ই মনে হয়েছিল।  প্রায়  আধঘণ্টা সময় নিয়ে বললেনও ।

       ষাট বছর আগের কথা দিয়ে তিনি  শুরু করেছিলেন। যেভাবে গল্প লেখা হচ্ছিল তাতে তাঁর মন সায় দিচ্ছিল না। 'সামাজিক বাস্তবতা' থেকে 'লেখকের দায়বদ্ধতা'  ইত্যাদি শব্দগুলো বেশ ভারী ঠেকছিল। মনে হচ্ছিল অন্য ভাবে, সম্পূর্ণ ভিন্ন রীতিতে, নতুন কিছু বলা দরকার । রমানাথের সে-সব ইচ্ছে  ১৯৬২-তে প্রকাশিত দশটি গল্পের সংকলন 'দু ঘণ্টার ভালোবাসা'-তে ধরা আছে। এক‌ই সময়ে রমানাথ প্রকাশ করতে শুরু করেন 'এই দশক' নামের একটি বুলেটিন। বুলেটিনের নামটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। যেন আগের দশকগুলি থেকে ভিন্ন কিছু ভাবা ও করার দরকার আছে। ন-টি বুলেটিন প্রকাশিত হয়।  ১৯৬৬-তে সেটি পত্রিকার চেহারা নেয়  এবং  শাস্ত্রবিরোধী গল্পকারদের মুখপত্র হয়ে ওঠে। প্রায় ষোলো বছর বেরিয়েছিল সে পত্রিকা। ততদিনে শুধু শাস্ত্রবিরোধী লেখকদল নয়,  পাশাপাশি একটি পাঠকগোষ্ঠীও তৈরি হয়ে গেছে। শাস্ত্রবিরোধীতার ক্ষেত্র‌ও গল্প থেকে উপন্যাসে বিস্তৃতি পেয়েছে।

        বাংলা গল্পের প্রচলিত রীতি যে ভাঙা দরকার তা পাঁচের দশকের শেষ দিকে অনুভব করেছিলেন কেউ কেউ। ১৯৫৯ সালে বিমল কর চারজন গল্পকারের  চারটি ছোটোগল্প  প্রকাশ করে নতুন রীতির গল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন বলা যায় । এই চারটি গল্পের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের 'বিজনের রক্তমাংস' এবং দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'জটায়ু'। এ  দুটি গল্প রমানাথের বিশ্বাসকে আর‌ও প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল যে অন্য  পথে যাওয়া দরকার এবং তা সম্ভব‌ও। সেই  নতুন পথের সন্ধানে গিয়ে রমানাথের মনে হয়েছিল কাহিনিনির্ভর গল্পের মধ্যে বড়ো বেশি যুক্তি ও শৃঙ্খলা।  সে সব গল্পের যে গার্হস্থ্য‌জীবন তাও বানানো । তাঁর মনে  প্রশ্ন জেগেছিল জীবনে যখন এতো অনিশ্চয়তা তখন সাহিত্যে এতো বানানো নিশ্চয়তা  কেন ? এই শৃঙ্খলা  এক অর্থে শৃঙ্খল, এই নিটোল নির্মাণ এক অর্থে স্থিতাবস্থার সহচর। শিল্প একটা মুক্ত পরিসর খোঁজে।  তত্ত্ব ও সূত্র  দিয়ে তাকে জড়ালে অন্তরের জটিল অনুভূতি প্রকাশের পথ  মেলে না।  তাই সাহিত্যের সংহিতা থেকে বেরিয়ে জীবনের সহজিয়া পথে কথাকারদের চলা দরকার। বিশ-বাইশ বছরের রমানাথ  'দু ঘণ্টার ভালোবাসা' পর্বের গল্পগুলিতে সে পথ ধরেই হেঁটেছেন।

          'দু ঘণ্টার ভালোবাসা' নামের যে গল্প তার শুরু একজন সেলসম্যান ও তার সঙ্গে আসা বাইশ-তেইশ বছরের এক অবিবাহিত যুবতীকে দিয়ে। তারা একটি বাড়িতে তাদের কোম্পানির বিস্কুট বিক্রি করতে এসেছে। সেলসম্যান জানাচ্ছে যে তাদের বিস্কুট কিনলে তারা  একটি বিশেষ গিফ্ট দিচ্ছে। তারপর গল্পে লেখা হয় ---

        গিফ্টের কথা শুনে উৎসুক হয়ে উঠলাম। জিজ্ঞেস করলাম, কী  গিফ্ট ?
        লোকটি মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, আপনি এর গালে একটা চুমু খেতে পারেন।
        কথাটা শুনে চমকে উঠি, সত্যি?
        ---সত্যি।
        ---যদি দুটো নিই?
        ---তাহলে দুটো চুমু।  আর যদি দশটা প্যাকেট নেন তাহলে এর  সঙ্গে দু-ঘণ্টা সময় কাটাতে পারবেন। আপনার একটা অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হবে।

        রমানাথ রায় ঠিক এতখানি যান্ত্রিক এক জগতের গল্প শুনিয়েছিলেন এখন থেকে প্রায় ষাট বছর আগে। সেখানে একাধিক যুবতী নারী আছে,  তাদের তুলতুলে হাত আছে, তাদের গালে চুমু খাওয়ায় অধিকার আছে কিন্তু তাদের প্রেম নেই। তাদের ভিন্ন পরিচিত‌ও নেই। একটাই নাম তাদের--- টিনা। তারা কোনো স্বপ্ন দেখায়‌ না, দেখেও না।  পরিদের মতো ডানাওয়ালা যুবতীও  মেলে  কিন্তু মনে পড়ে ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ আর দু-বোনের প্রতীক্ষার কথা । তখন যুবতীটির সঙ্গে  ডানায় চড়ে পাহাড় কিংবা সমুদ্র দেখে আসার ইচ্ছে চলে যায়।  এই গল্পে কোনো রোমান্টিক ভাবালুতা নেই, প্রেমের পেলবতা নেই, যৌনতার আনন্দ নেই।  একটা পারিবারিক জীবনের ছবি আছে কিন্তু তা বেশ ভাঙাচোরা। মা রোগে কাতরায়, দিদি তার স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে না পেরে ফিরে আসে, ছোটো বোন দেখতে তেমন ভালো নয় বলে বিয়ে হয় না। তাই একটা বিষণ্ণতা সংসারের চারটি মানুষকে ঘিরে রাখে । আর দশ প্যাকেট বিস্কুটের বিনিময়ে চুক্তির যে কেনা ভালোবাসা, তা  ঠিক দু ঘণ্টা পরে, একবার‌ও পিছন ফিরে না তাকিয়ে  চলে যায়। বাস্তব ও ফ্যান্টাসি মিশিয়ে এমন‌ই এক গল্পের জগৎ সেদিন তৈরি করছিলেন রমানাথ।


           'কারণ অজ্ঞাত' গল্পে একটা চমৎকার পারিবারিক ও সামাজিক ছবি আছে । সে ছবি বেশ নিখুঁত ও নিটোল কিন্তু পাঁচুর রাগ  দুদিন পরেও না পড়াতে সেই ছবিটাই  দ্রুত এলোমেলো হতে শুরু করে। চারপাশের মানুষজনের ভিতরের চেহারাটা বেরিয়ে আসে। পাঁচুর রাগের প্রকৃত কারণ কেউ জানে না আর তাই সবাই ভাবে  তার উপরে  রাগ করেই পাঁচু কথা বলছে না । বাজারের যে  আলুওয়ালা, পেঁয়াজওয়ালা, মাছ‌ওয়ালারা বহুকাল ধরে পাঁচুকে ওজনে ঠকিয়ে আসছে, তারা এবার ঠিকঠাক ওজন দেওয়া শুরু করে। অফিসের বড়োকর্তা পাঁচুর  যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাকে বঞ্চিত করে অযোগ্য শিবপ্রসাদকে প্রমোশন দিয়েছে কারণ সে  ইলিশ ও ট্যাংরা খাইয়েছে এবং  মদের বিল‌ও মিটিয়েছে। কিন্তু পাঁচুর রাগী মুখটা দেখে বড়োকর্তা ভাবে এবার পাঁচুর জন্যে কিছু একটা করতেই হবে । পাঁচুর ব‌উ ভাবে পুরোনো প্রেমিকের সঙ্গে  যোগাযোগ রাখার খবরটা  পাঁচু নিশ্চিত জেনেছে আর তাতেই এমন রেগে আছে। সে ঠিক করে এবার থেকে সে শুধু পাঁচুকেই ভালোবাসবে। পাঁচুর আত্মীয়স্বজন থেকে পাড়ার ক্লাবের কর্মকর্তারা পর্যন্ত  নিজেদের ভুল শুধরে নেবার কথা ভাবে। শেষ পর্যন্ত পাঁচুর ঘরে বাড়ির ও পাড়ার মহিলারা একসঙ্গে সোচ্চারে কান্না জোড়ে । তা দেখে পাঁচু হেসে ফেলে এবং চারপাশের মানুষজন আবার তাদের পুরোনো চরিত্রে ফেরে। রমানাথ রায়ের এই গল্পের শেষে পাঁচুর চারপাশের লোকজনদের মধ্যে আর কোনো আত্মগ্লানি নেই। পাঁচুর‌ও  রাগ নেই, বরং সে হাসছে। সব মিলে যা তৈরি হয় তা হলো ব্ল্যাক হিউমার। ডুবন্ত জাহাজের নাবিক, শত্রুপক্ষের কামানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সৈনিক, ফাঁসির আসামির  কোনো কোনো কথা ও কাজে এই হাসি জন্ম নেয়।

           'ফু' গল্পের কথক কোনো একজনের কাছে বলেছিল যে তার জ্যাঠামশাই মিথ্যেবাদী। কেউ একজন সে কথা তার মুখ্যমন্ত্রী জ্যাঠামশাইয়ের কানে তুলে দেয়। তাতেই কলকাতার সরকারী দপ্তর থেকে ষোলো বছরের জন্যে নির্বাসিত হয়ে কুচবিহার, মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি ইত্যাদি জায়গায় ঘোরা। আবার জ্যাঠামশায়ের কৃপাদৃষ্টিতে কলকাতায় ফেরা এবং মনের আনন্দে চাকরি করা, ব‌উ মিনুর সঙ্গে সিনেমা দেখা, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যাতায়াত করা। কিন্তু হঠাৎ একদিন জানলার কাছে দুর্গন্ধ পাওয়া গেল এবং দেখা গেল একটা মরা কুকুর পড়ে আছে। তারপর কুকুরের সঙ্গে মানুষের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। কর্পোরেশনে যোগাযোগ করে, পুলিশে খবর দিয়ে, এমনকী মুখ্যমন্ত্রী জ্যাঠামশাইকে বলেও কাজ হয় না। শেষে জ্যাঠামশাই প্রমাণ চেয়ে বসেন। একটার পর একটা প্রমাণ দিতে দিতে হঠাৎ দেখা গেল  'জ্যাঠামশাইয়ের চেয়ারে আমি বসে আছি আর আমার চেয়ারে জ্যাঠামশাই বসে আছেন।' জ্যাঠামশাইয়ের সঙ্গে লড়াই করতে করতে 'আমি কখন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গেছি।' তখন  জ্যাঠামশাইয়ের মুখে রাস্তায় দুর্গন্ধ, বিনা চিকিৎসায় মানুষজনের মৃত্যু, বেকার সমস্যা,খাদ্য সমস্যা, মেধাহীনতা ইত্যাদি নানা অভিযোগ আর  ভাইপো সে সব অভিযোগের প্রমাণ চায়। জ্যাঠামশাই টেবিল চাপড়ে 'ফুঃ' বলেন আর মুখ্যমন্ত্রী ভাইপোও টেবিল চাপড়ে 'ফুঃ' বলে। রমানাথ রায় সেদিন বাংলা কাহিনির প্রচলিত বিন্যাস  এবং চরিত্রের নির্মাণকে ঠিক  এতখানিই ওলটপালট করে দেন। গল্পের মানুষজনের মধ্যে ভালোমন্দের কোনো ভাগাভাগি নেই। রমানাথ বাস্তবতাকে অস্বীকার করেন না কিন্তু তার পরিচিত তাত্ত্বিক গড়নকে একেবারেই আমল দেন না।


           নিজের ভাড়া করা ফ্ল্যাটের কলিং বেল টিপে নিজেকেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়, 'কাকে চাই?' দু-চার কথার পর জানা যায় যে শুধু ফ্ল্যাট‌ই বেদখল হয়নি, যার সঙ্গে থাকত সেই বিবিও বেদখল হয়ে গেছে। যে এখন ফ্ল্যাটের দখল নিয়েছে সেই বলাই দত্তের  সঙ্গে বিবি এখন স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকে। থানায়  গিয়ে অভিযোগ করাতে জানা গেল বলাই দত্ত রাজনৈতিক লোক এবং সব অর্থেই বেশ ক্ষমতাবান। তবু পুলিশ ফ্ল্যাটে যায় এবং বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে আর ভাড়ার রসিদ দেখে বলাই দত্তকে ফ্ল্যাট থেকে বার করে দেয়। সে সঙ্গে বিবিও বেরিয়ে যায় কারণ সে বলাই দত্তকে ভালোবাসে। অবশ্য বলে রায় বলাই দত্তের সঙ্গে ভালো না লাগলে আবার ফিরে আসবে। কিন্তু ফেরার সে পথ বন্ধ করতে নতুন মেয়ের সন্ধান করে কিন্তু কেউ কালো, কেউ ঢেঙা, কার‌ও আবার কোমর মোটা। সে তাদের বাতিল করে আবার কেউ কেউ তাকেও বাতিল করে কারণ সে বেঁটে ও কালো। শেষ পর্যন্ত বিবি‌ই ফিরে আসে কারণ বলাই দত্তের সঙ্গে তার থাকতে ভালো লাগল না। মনে হলো সবকিছু আবার আগের মতো হয়ে গেল। কিন্তু আবার অফিসের কাজে বাইরে থেকে ঘুরে এসে দরজার কলিং বেল টেপার পর সেই এক‌ই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়---কাকে চাই? তবে এবার শুধু বলাই দত্ত নয়, তার পিছনে আছে বাড়ির মালিক, অন্য প্রতিবেশী এবং পুলিশ‌ও। রমানাথ রায়ের এই গল্পের শুরু ও শেষে একটাই প্রশ্ন শোনা গেছে ---কাকে চাই ?  কে যে  ঠিক কাকে চায় তার নির্দিষ্ট কোনো উত্তর নেই।  যাকে চায় সে  বিবি হতে পারে, ঝুমা হতে পারে, হেমা হতে পারে, চাঁপা হতে পারে।  আবার অন্য কেউ হলেও ক্ষতি নেই। উল্টোদিকে বিবি বা ঝুমারাও যে নির্দিষ্ট কাউকে চায়, এমন‌ও নয়।  কখন‌ও জৈবিক একটা সম্পর্ক, কখন‌ও অর্থনৈতিক একটা নিরাপত্তা একজন মানুষকে আর একজনের কাছে এনে ফেলে। এমন‌ই ক্ষণস্থায়ী কিছু অসম্পর্কে বাঁচা। ঘরের বাইরে গেলে আবার সেখানে ফেরাও অনিশ্চিত। আত্মকেন্দ্রিক ও নিরাশ্রয় এক জগতের অনাসক্ত  বিবরণ লিখলেন রমানাথ। সে বিবরণের একটা বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো গল্পকার সেখানে দর্শক মাত্র। রমানাথ অনেক বেশি চরিত্রগুলির  সংলাপের উপর জোর দিলেন । ফলে গল্পকার‌ অনেক অনাবশ্যক দায় থেকে মুক্তি পেলেন।

           পুষ্কর দাশগুপ্ত তাঁর একটি লেখায় বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনে  তাঁদের অভিনব  স্টল সাজানোর কথা লিখেছিলেন। হাতে টাকা কম বলে তেমন ভাবে কিছু করে উঠতে পারেননি তবে হঠাৎ একটা মাটির ঘট পেয়ে যান।   সেটাকে সাজিয়ে স্টলে রাখবেন বলে রমানাথ রায়কে একটা ডাব আনতে বলেন কিন্তু কলেজ স্ট্রিট বাজারে গিয়ে রমানাথ দেখেন সব ডাব বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি অবশ্য ফাঁকা হাতে ফেরেননি। একটি এঁচড় কিনে নিয়ে যান এবং সেটাই ঘটের উপর রাখা হয়।  মঙ্গলঘটের প্রতীকটি এভাবে ভেঙে যাওয়াতে  স্টলে আসা মানুষজনের অনেকেই চটে যান।  রমানাথ বাংলা গল্পে ঠিক এই কাজটাই করেছিলেন। কাহিনি, চরিত্রায়ণ, দায়বদ্ধতা, জীবনদর্শন, মহত্ত্ব ইত্যাদি মঙ্গলচিহ্নগুলিকে বিসর্জন দিয়ে বাংলা কথাসাহিত্যের ঘটে এঁচড় চড়িয়েছিলেন।  ঘটটা সংগ্রহ করেছিলেন পুষ্কর দাশগুপ্ত কিন্তু মেলার মাঠে ঘটটা কে ছেড়ে এসেছিলেন, সেটা একটা প্রশ্ন। মার্ক টোয়েন, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়,  শ্রীরামকৃষ্ণ, সুকুমার রায়, পরশুরাম থেকে অঁতোন্যাঁ আর্তোর মধ্যে যে কেউ এটা করতে পারেন আবার তাঁরা একসঙ্গে গিয়েও রেখে আসতে পারেন।‌ তবে সে ঘটের মাথার এঁচড়টা যে  রমানাথ রায়‌ই বাজার থেকে কিনে নিয়ে যান,  এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। একজন লেখকের প্রধান কাজ‌ই তো হলো  প্রচলিত প্রতীক ও চেনা রীতিকে ভেঙে ফেলা।



রামকুমার মুখোপাধ্যায় 

ব্যস, আর কিচ্ছু নয় । 

No comments:

Post a Comment

We are waiting for your opinion. Please Comment.

Thank You.